As-Salamu Alaikum. Welcome to Our SQSF-স্মার্ট লাইব্রেরী এবং কাউন্সেলিং (আত্নশুদ্ধির) সফটওয়্যার_SQSF-Smart Library and Counseling Software. Reg No: S-13909 www.sqsf.org ফোনঃ 01764 444 731
সাওয়াব অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথ
আল্লাহর রহমত, বরকত ও সাওয়াব অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথ আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি, বিশেষত মানুষের প্রতি কল্যাণ ও উপকারের হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
যে কোনো জাগতিক প্রয়োজনে সাহায্য করা, সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে পরস্পরে গোলমাল বা অশান্তি হলে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, সেবা করা, বিপদে পড়লে উদ্ধার করা, মাযলূম হলে সাহায্য করা, মৃত্যুবরণ করলে কাফন-দাফনে শরীক হওয়া ইত্যাদি সকল প্রকার মানব সেবামূলক কাজের জন্য অকল্পনীয় সাওয়াব ও মর্যাদার কথা অগণিত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
অন্যান্য ইবাদত এবং সেবামূলক ইবাদতের মধ্যে তিনটি পার্থক্য বিদ্যমান:
(ক) তাহাজ্জুদ, যিকর ইত্যাদি ইবাদতের চেয়ে খিদমাতে খালকের সাওয়াব বহুগুণ বেশি,
(খ) অন্যান্য ইবাদতের সাওয়াব মূলত আখিরাতের জন্য আর খিদমাতে খালকের কারণে আল্লাহ আখিরাতের সাওয়াব ছাড়াও দুনিয়ায় বরকত দান করেন এবং
(গ) খিদমাতে খালক জাতীয় ইবাদতের ওসীলা দিয়ে দুআ করলে আল্লাহ বিপদাপদ কাটিয়ে দেন।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন:
যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য কোনো মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে ততক্ষণ আল্লাহ তার কল্যাণে রত থাকবেন। আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় বান্দা যে মানুষের সবচেয়ে বেশি উপকার করে।
আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নেক আমল কোনো মুসলিমের হৃদয়ে আনন্দ প্রবেশ করান, তার বিপদ, কষ্ট বা উৎকণ্ঠা দূর করা, তার ঋণ আদায় করে দেওয়া অথবা তার ক্ষুধা দূর করা।
আমার কোনো ভাইয়ের কাজে তার সাথে একটু হেঁটে যাওয়া আমার নিকট মসজিদে এক মাস ইতেকাফ করার চেয়েও বেশি প্রিয়। যে ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের সাথে যেয়ে তার প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে কিয়ামতের দিনে যেদিন সকলের পা পিছলে যাবে সেদিন আল্লাহ তার পা সুদৃঢ় রাখবেন।”[1]
… এ অর্থে অনেক হাদীস আমরা হাদীসের গ্রন্থসমূহে দেখতে পাই। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “যদি কেউ কোনো অসুস্থ মানুষকে দেখতে যায় তবে ফিরে না আসা পর্যন্ত সে জান্নাতের মধ্যে বিচরণ করতে থাকে।”[2]
অন্য হাদীসে তিনি বলেন, “যদি কেউ সকালে কোনো অসুস্থ মুসলিমকে দেখতে যায় তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭০ হাজার ফিরিশতা তার জন্য দু‘আ করতে থাকে। আর যদি বিকালে যায় তবে সকাল পর্যন্ত ৭০ হাজার ফিরিশতা তার জন্য দু‘আ করতে থাকে।”[3]
আবু হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন বলেন: “তোমাদের মধ্যে আজ কে সিয়ামরত ছিলে? আবু বকর (রা) বলেন: আমি। তিনি প্রশ্ন করেন: তোমাদের মধ্যে কে আজ কোনো জানাযায় শরীক হয়েছ? আবু বকর (রা) বলেন: আমি। তিনি প্রশ্ন করেন: তোমাদের মধ্যে কে আজ দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করেছ? আবু বকর (রা) বলেন: আমি। তিনি আবার প্রশ্ন করেন: আজ তোমাদের কে অসুস্থ কোনো মানুষকে দেখতে গিয়েছ? আবু বকর বলেন: আমি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: এ কর্মগুলো যদি কোনো মানুষের মধ্যে একত্রিত হয় তাহলে সে ব্যক্তি অবশই জান্নাতী হবেন।”[4] মহান আল্লাহ আমাদেরকে এ কর্মগুলো করার তাওফীক দান করুন। আমীন! (মাওলানা জাহাঙ্গীর)
ইউনেসকোর ২৬তম অধিবেশনের সিদ্ধান্তে ১৯৯৪ সাল থেকে প্রায় দুইশ দেশে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়।
প্রিয় নবী (সা.) নিজেকে বলতেন ‘শিক্ষক’। তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি।’ শিক্ষক দিবসের পরিপ্রেক্ষিতে হাদিসটি গুরুত্বপূর্ণ। জাতিকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জোগায় শিক্ষক। তারাই ‘মানুষ গড়ার কারিগর’।
জ্ঞান মানুষকে আলোকিত করে। মূর্খতা ডেকে আনে পতন-পরাজয়। ইসলাম মানুষকে জ্ঞানের পথে চলতে বলে, জ্ঞানচর্চাকে উৎসাহিত করে। জাহেলি আরবে শিক্ষিত লোক ছিল মাত্র ১৭ জন।
তৎকালীন সমাজ ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার এটাও একটা কারণ ছিল। মহান আল্লাহ সে অন্ধকার সমাজে সর্বপ্রথম নির্দেশ দিলেন, ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে—যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন ... তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন, যা সে জানত না।’ (সুরা : আলাক, আয়াত : ১-৫)
এ আয়াত থেকেই মুসলিম সমাজে জ্ঞানচর্চা ও তার সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষের মর্যাদা ও অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ইসলাম শিক্ষকসহ জ্ঞানচর্চা ও প্রসারের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে?’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যাকে জ্ঞান দান করা হয়েছে তাকে প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়েছে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিক্ষকের মর্যাদা সম্পর্কে বলেন, ‘কল্যাণকর বিদ্যা দানকারীর জন্য সবাই (প্রাণী ও প্রকৃতি) আল্লাহর কাছে (দোয়া) মাগফিরাত কামনা করে।’ (সুনানে তিরমিজি)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই সওয়াবের অধিকারী।’ (ইবনু মাজাহ)
প্রিয় নবী (সা.) আরো বলেন, ‘সর্বোত্তম দান হলো কোনো মুসলমান নিজে কোনো বিষয়ে জ্ঞানার্জন করে পরে তা অপর মুসলমান ভাইকে শিক্ষা দেয়।’ (ইবনু মাজাহ)
তবে একজন শিক্ষককে অবশ্যই আদর্শ ও নৈতিকতার অধিকারী হতে হবে। প্রিয় নবী (সা.) যেমনটি বলেছেন, ‘নৈতিকতার বিচারে যে লোক উত্তম মুমিনদের মধ্যে সে-ই পূর্ণ ঈমানের অধিকারী।’ (তিরমিজি)
‘সহীহ কুরআন শিক্ষা ফাউন্ডেশন’ শিক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত সেবার একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থা করেছে, যেখানে একজন আদর্শবান শিক্ষক অসংখ্য কুরআনের শিক্ষার্থীদেরকে কর্মমুখী বিভিন্ন শিক্ষা দিয়ে সেবা করার সুযোগ পাবেন।